মহান মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য রাজশাহীর ১২ নারী বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের সম্মাননা জানানো হয়। জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল তাদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রাণালয়ের উদ্যোগে এ দিন দেশের ৬৫৪ জন নারী বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা জানানো হয়। কেন্দ্রীয়ভাবে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এর মূল অনুষ্ঠান হয়। একই সময়ে দেশের সব জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মনোনীত নারীদের এই সম্মাননা দেয়া হয়।

রাজশাহীর সম্মাননা পাওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা নারীরা হলেন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জিনাতুন নেছা তালুকদার, পুঠিয়ার বাঁশবাড়ী গ্রামের ফিরোজা বিবি, পুঠিয়ার নওপাড়া গ্রামের আঙ্গুরা বেগম, বাগমারার গোয়ালাকান্দি গ্রামের শামসুন নাহার, বাঘার চকছাতারী গ্রামের শাহীদা বেগম শাহানা, মহানগরীর সাগরপাড়ার লায়লা পারবীন বানু, মহানগরীর লক্ষ্মীপুরের আলেয়া শরীফ, মহিষবাথান গ্রামের কাজী মিসবাহুন নাহার, মহানগরীর কুমারপাড়া এলাকার সান্তনা ঘোষ, উপশহরের নাজবুন নেছা, ঘোড়ামারার বুলবুল রাণী ঘোষ এবং সাবিত্রী বিশ্বাস।

সম্মাননা পেয়ে শাহিদা বেগম শাহানা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের অবদান রাখার জন্য কখনও সম্মাননা পাব ভাবিনি। মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। এরপরই এই স্বাধীন দেশ পেয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি রাজশাহী লেডি হেলথ ইনস্টিটউটে পড়তাম । হঠাৎ চারিদিকে যুদ্ধ শুরু হলো। এরপর হোস্টেল থেকে আমি গ্রামের বাড়ি ঈশ্বরদীতে যাই। সেখানকার অবস্থাও খারাপ হতে থাকে। এরপর আমার পরিবারের সঙ্গে মালদা চলে যাই। সেখানে দেখতে পাই মাইকিং করা হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা ও শরণার্থীদের সাহায্য করার জন্য। এরপরে বহরামপুরে ক্যাম্পে যোগ দেই। তারপর থেকে শুরু হয় আহত মুক্তিযোদ্ধা ও শরণার্থীদের সহযোগিতা করা। ৯ মাস কষ্টের পর অবশেষে এই স্বাধীন দেশ পাই।’

সম্মাননা অনুষ্ঠানে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন- মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের রাজশাহী শাখার উপপরিচালক শবনম শিরিন, প্রোগ্রাম অফিসার রাশেদা পারভীন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান, জাতীয় মহিলা সংস্থার রাজশাহী শাখার চেয়ারম্যান মর্জিনা পারভীন প্রমুখ।